আয়াতুল কুরসীর মর্যাদা

আয়াতুল কুরসীর মর্যাদা

হজরত আলী (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশীর ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। (বায়হাকি)

শয়তানের প্রভাব এবং ভূত-প্রেত থেকে বাঁচার জন্য আয়াতুল কুরসি পাঠ পরীক্ষিত।
হজরত ইমাম আহমাদ (রহ.) বর্ণনা করেন, আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) নবী করিমকে (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সা.) বললেন, আয়াতুল কুরসি। (নাসাঈ)

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াতে (আমানার রাসূল থেকে শেষ পর্যন্ত) পাঠ করায়ও অনেক উপকারের কথা বর্ণিত আছে। শেষ আয়াতে অত্যন্ত জরুরি দোয়া রয়েছে। এসব দোয়া কবুল হওয়ার ওয়াদাও আছে। প্রিয় নবীজী (সা.) একদিন বললেন, এ সময় আকাশের একটি দরজা খোলা হয়েছে। এর আগে কখনও এ দরজা খোলা হয়নি, এ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতরণ করছেন। এর আগে তিনি কখনও পৃথিবীতে অবতরণ করেননি। এ ফেরেশতা হুজুরকে (সা.) সালাম করে বলেন, সুসংবাদ গ্রহণ করুন আপাদমস্তক দুটি নূরের, যা আপনার আগে কোন নবীকে দেয়া হয়নিÑ ১. ফাতেহাতুন কিতাব; অর্থাৎ সুরা ফাতেহা এবং ২. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত। উভয় আয়াতে দোয়া আছে। আল্লাহর উসিলা করে, আপনি এসব দোয়ার যে অংশই পাঠ করবেন আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই রহমত দান করবেন। (মুসলিম)

হজরত ইবনে আব্বাসের (রা.) বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা এ দুটি আয়াত জান্নাতের ভাণ্ডার থেকে অবতীর্ণ করেছেন। জগৎ সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে পরম দয়ালু আল্লাহতায়ালা নিজের হাতে তা লিখেছিলেন।

এশার নামাজের পর এ দুটি আয়াত পাঠ করলে তা তাহাজ্জুদ নামাজের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যায়। মুস্তাদ্রাক, হাকেম ও বায়হাকির বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা এ দুটি আয়াতে সুরা বাকারা সমাপ্ত করেছেন। আরশের বিশেষ ভাণ্ডার থেকে এ দুটি আয়াত আমাকে দান করা হয়েছে। তোমরা বিশেষভাবে এ দুটি আয়াত শিক্ষা কর এবং নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিকে শিক্ষা দাও।

এ কারণেই হজরত ফারুকে আজম ও আলী (রা.) বলেন, আমাদের মতে, যার সামান্যও বুদ্ধিজ্ঞান আছে, সে এ দুটি আয়াত পাঠ করা ছাড়া নিদ্রা যাবে না। (মানাকিবুস সাহাবা)

হজরত নোমান ইবনে বশিরের (রা.) বর্ণনায় আছে আল্লাহতায়ালা দুটি আয়াত নাজিল করে সুরা বাকারার সমাপ্তি টেনেছেন। যে ঘরে এ আয়াতগুলো তিন রাত পড়া হবে, শয়তান সে ঘরের কাছে আসবে না। (তিরমিজি, দারেমি)
হজরত আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করবে, তার জন্য এ দুটি আয়াত যথেষ্ট হবে; অর্থাৎ সারারাত সে জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটি অপ্রিয় বিষয় থেকে তাকে হেফাজত করা হবে। (বুখারী- মুসলিম)

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সবাইকে পবিত্র কোরআন শরিফের এ বরকতময় সম্মানিত আয়াত পাঠ এবং আমল করার তাওফিক দিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতের সব মুসিবত, বিপদ-আপদ, রোগ-শোক অতিক্রম করে শান্তিময় ও সুখের জীবনলাভে ধন্য করুন। আমিন!

 

 

Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: