ইসঃ আঃ কর্মীদের কাঙ্খিত মান

মহান আল্লাহ তায়ালা মহাবিশ্বের সকল সৃষ্টির স্রষ্টা এবং প্রতিপালক। প্রত্যেক সৃষ্টিই তার হুকুম অনবরত পালন করছে এবং জিকির করছে। সকল সৃষ্টিই নির্দিষ্ট একটি নিয়মে চলছে। শুধুমাত্র মানুষই ব্যতিক্রম সৃষ্টি। যাকে সৃষ্টি করার পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। এই মানুষই একমাত্র সৃষ্টি যার কিনা স্রষ্টার হুকুম অমান্য করার সামর্থ রয়েছে। আর আল্লাহ তায়ালা সেটাই দেখবেন যে, সামর্থ থাকা সত্ত্বেও তাকে যে ভয় করে এবং যে করেনা। সেটা বিচার করার জন্যই দুনিয়ার সৃষ্টি।
যাহোক, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষ আল্লাহর হুকুম এবং রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মানুষ মহান প্রভূর হুকুম অমান্য করছে এবং মহান আদর্শ প্রিয় রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ এড়িয়ে চলছে। নিজের জবিনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি বিধান অনুসরণ এবং অন্যদের নিকট তা পৌছে দেয়ার জন্য প্রানপণ চেষ্টা করা এবং সমাজে ও রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করার নাম ইসলামী আন্দোলন।
এই ইসলামী আন্দোলন যারা করবেন তথা এই আন্দোলনের যারা কমর্ী হবেন তাদের অপরিহার্য কিছু গুণাবলী অর্জন করতে হবে এবং ব্যক্তি জীবন ও সামাজিক জীবনে আমল করতে হবে। তবেই নিজে ভাল মুসলমান হতে পারবে এবং চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে সমাজের অপরাপর মানুষদেরকে আল্লাহর দ্বীনের দিকে ডাকতে পারবে।
ইসলামী আন্দোলনের কমর্ীদের কাঙ্খিত মান:
১. ব্যক্তিগত গুণাগুণ অর্জন এবং পালন:
২. সহীহ ঈমান
৩. ইসলামের যথার্থ জ্ঞান অর্জন
৪. সমসাময়িক জ্ঞান অর্জন
৫. ঈর্ষনীয় চরিত্র
৬. মার্জিত ব্যবহার
৭. ধৈর্য্য
৮. সর্বক্ষেত্রে ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন
সাংগঠনিক গুণাবলী অর্জন ও পালন
১. সঠিক নেতৃত্ব
২. যথাযথ আনুগত্য
৩. সার্বিক শৃংখলা সংরক্ষণ
৪. অভ্যন্তরীণ পরিবেশ সংরক্ষণ (সম্পর্ক ও আচরণ)
৫. পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা (ভ্রাতৃত্ববোধ)
৬. পরামর্শ ভিত্তক কাজ করা
৭. অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া
সামাজিক গুণাগুণ অর্জন ও পালন:
১. সমাজের আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে তৈরী করা
২. সমাজের যে কোন ঘটনায় মতামত প্রকাশ
৩. সামাজিক সমস্যার সমাধানে অংশগ্রহণ
৪. মানুষের দুঃখ ও দূর্দশায় পাশে দাড়ানো ও মানুষের আনন্দে সাধুবাদ জানানো
৫. ব্যক্তির বয়স, পেশা, মর্যাদা হিসেবে ব্যবহার
৬. ভালোকাজে উৎসাহ দান, মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা
৭. নিজ উদ্যোগে গঠনমূলক কাজের উদ্যোগ গ্রহণ
পারিবারিক গুণাগুণ অর্জন ও পালন:
১. পিতামাতার বাধ্য থাকা
২. বড় ছোট ভাই বোনদেরকে হক অনুযায়ী ব্যবহার
৩. পরিবারে ইসলামী নীতি অনুসরণ করানোর জন্য চেষ্টা করা
৪. পরিকল্পিতভাবে সবার কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌছানো
৫. আত্মীয় স্বজনের সাথে পর্দা সংরক্ষণে যত্নবান হওয়া
৬. পরিবারের অর্থনৈতিক লেনদেনে ন্যায়ের ব্যাপারে আপোষহীন থাকা
৭. আত্মীয় স্বজনের হক আদায়ে সচেষ্ট থাকা
উপরোল্লেখিত গুণাগুণ সমূহের মধ্যে অনেক কার্যাবলী ও উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের কোন কর্মী এসব গুণাগুণ অর্জন করলে তার অবস্থান যেখানে হোক সেখানেই যে নিজেকে প্রস্ফুটিত ফুলের ন্যায় সৌরভ ছড়াতে সক্ষম হবে। আর যখন এমন কর্মী তৈরী বেশি হবে তখনই আমরা সমাজ পরিবর্তনের আশা করতে পারি।
উপরোল্লেখিত গুণের সমাবেশ ঘটানো খুব কঠিন কাজ নয়।
নিম্নোক্ত বিষয়গুলো আরম্ভ করলে এই সব গুণাগুণ ব্যক্তির মধ্যে তৈরী হবে।
সেগুলো হল-
১. কুরআন হাদীস সরাসরি অধ্যয়ন
২. বেশি বেশি ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন
৩. নবী জীন্দেগী ও সাহাবা জীন্দেগী, ইসলামী মনিষীদের জীবনী, বিশ্বের খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গের জীবনী অধ্যয়ন :
৪. সত্য ও ন্যায়ের ব্যাপারে আপোষহীন থাকা
৫. সাংগঠনিক মান উন্নয়ন ও সংরক্ষণ করা
৬. ক্ষমা করার প্রবণতা
৭. আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয়
৮. বেশি বেশি নফল ইবাদত (নামাজ, রোজা, জিকির)
উপরোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি আমল করতে পারলে ব্যক্তি একজন খাঁটি মুসলিম এবং ইসলামী আন্দোলনের আদর্শ কর্মী হতে পারবেন। আর এই কর্মীদের সমন্বয়েই গঠিত হবে ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে শ্রেষ্ঠ মানের কর্মী হিসেবে কবুল করুন। আমীন\\
Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: