সালাত পরিচিতি

পাচ ওয়াক্বত সালাতের সময়ঃ-

(১) যোহর নামাযের সময়ঃ- সূর্য ঢলে যাওয়া হতে অর্থাৎ মধ্য আকাশ হতে সূর্যের পশ্চিম দিকে ঢলে যাওয়া হতে নিয়ে প্রত্যেক বস্তুর ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়া পর্যন্ত, যতক্ষণ না ‘আসরের সময় এসে উপস্থিত হয়।

(২)‘আসর নামাযের সময়ঃ- যোহর নামাযের সময় চলে যাওয়া হতে অর্থাৎ প্রত্যেক বস্তুর ছায়া তার সমপরিমাণ থেকে একটু বেড়ে যাওয়া থেকে দ্বিগুন হওয়া পর্যন্ত। আর তা হলো সূর্য হলদে হয়ে যাওয়ার সময় পর্যন্ত।

(৩) মাগরিব নামাযের সময়ঃ- সূর্য ডুবার পর হতে লাল বর্ণের আভা অদৃশ্য হওয়া পর্যন্ত।

(৪) ‘ঈশার নামাযের সময়ঃ- মাগরিবের নামাযের সময় চলে যাওয়া হতে অর্থাৎ লাল বর্ণের আভা অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পর হতে অর্ধ রাত্রি পর্যন্ত।

(৫) ফজর নামাযের সময়ঃ- ফজরে ছানী তথা সুবহে সাদিক্ব প্রকাশ হওয়া থেকে নিয়ে সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত।

পাঁচ ওয়াক্বত সালাতের উল্লেখিত সময়ের ব্যাপারে প্রমাণ হলোঃ-আল্লাহ ইরশাদ করেছেন:-

إن الصلاة كانت علي المؤمنين كتابا موقوتا. (سورة النساء-١٠٣)

অর্থাৎ:- নিশ্চয় সালাত মো‘মিনদের উপর সময় সুনির্ধারিত ফর্‌য। (ছূরা আন্‌ নিছা-১০৩)

ক্বোরআনে কারীমের অন্য আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন:-

أقم الصلاة طرفي النهار وزلفا من الليل إن الحسنات يذهبن السيئات ذالك ذكري للذاكرين. (سورة هود-١١٤)

অর্থাৎ:- আর দিনের দুই প্রান্তে নামায ক্বায়েম করো এবং রাত্রেরও প্রান্তভাগে; অবশ্যই নেক কাজ পাপকে দূর করে দেয়, স্মরনকারীর জন্য এটি এক মহা স্মারক (ছূরা হুদ-১১৪)

আল্লাহ আরো ইরশাদ করেছেন:-

أقم الصلاة لدلوك الشمس إلى غسق اليل وقرآن الفجر إن قرآن الفجر كان مشهودا .(سورة الإسراء- ٧٨)

অর্থাৎ:- সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির ঘন অন্ধকার পর্যন্ত নামায ক্বায়েম করো এবং ফজরের ক্বোরআন পাঠও, নিশ্চয় ফজরের ক্বোরআন পাঠ প্রত্যক্ষ করা হয়। (ছূরা আল ইছরা-৭৮)

ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ আরো ইরশাদ করেছেন:-

وسبح بحمد ربك قبل طلوع الشمس وقبل غروبها, ومن آناء الليل فسبح وأطراف النهار لعلك ترضى (سورة طه-١٣٠)

অর্থাৎ:- এবং আপনার পালনকর্তার প্রশংসা দ্বারা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে। আর রাত্রির কিছু অংশে এবং দিবসের প্রান্তসমূহে আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন। তাতে হয়ত আপনি সন্তুষ্ট হবেন। (ছূরা ত্বোয়া-হা-১৩০)

 

সালাতের উল্লেখিত সময়ের ব্যাপারে হাদীছ ভিত্তিক প্রমাণ হলো-‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আমর

বর্ণিত হাদীছ; রাছূল বলেছেন:-

وقت الظهر إذا زالت الشمس وكان ظل الرجل كطوله مالم يحضرالعصر, ووقت صلاة المغرب ما لم يغب الشفق, ووقت صلاة العشاء إلى نصف الليل الأوسط, ووقت صلاة الصبح من طلوع الفجر مالم تطلع الشمس, فإذا طلعت الشمس فأمسك عن الصلاة. ( رواه مسلم)

অর্থঃ- যোহরের সময় হলো- সূর্য যখন পশ্চিম দিকে সরে যাবে (হেলে পড়বে) এবং ব্যক্তি যতটুকু দীর্ঘ তার ছায়াও যখন সমপরিমান হয়ে যাবে, যে পর্যন্ত না ‘আসরের সময় উপস্থিত হবে। আর মাগরিবের নামাযের সময় হলো সূর্য ডুবা হতে নিয়ে লালিমা অদৃশ্য হওয়া পর্যন্ত এবং ‘ঈশার নামাযের সময় হলো মাগরিবের নামাযের সময় চলে যাওয়া থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত। আর ফজরের নামাযের সময় হলো ফজর (সুবহে সাদিক্ব) প্রকাশিত হওয়া থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। আর যখন সূর্য উদিত হবে তখন নামায পড়া থেকে বিরত থাকো। (সহীহ মুছলিম)

যদি শরী‘য়ত গ্রাহ্য কোন ‘উযর (যেমন-নিদ্রা, ভুলে যাওয়া) না থাকে তাহলে এই পাঁচ ওয়াক্বত নামায তার নির্ধারিত সময়ে আদায় করা প্রাপ্ত বয়স্ক জ্ঞান-বোধসম্পন্ন প্রত্যেক মুছলমানের উপর ফর্‌য। ঘুমিয়ে থাকার কারণে কিংবা ভুলে যাওয়ার কারণে যদি সালাতের সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তাহলে ঘুম থেকে জাগার সাথে সাথে কিংবা স্মরণ হওয়ার সাথে সালাত আদায় করে নিতে হবে।

কেননা রাছূল বলেছেন:-

إذا نسى أحدكم صلاة أو نام عنها فليصلها إذا ذكرها (رواه النسائ والترمذى)

অর্থঃ- যখন তোমাদের কেঊ নামায পড়তে ভুলে যাবে কিংবা ঘুমিয়ে থাকার কারণে নামায পড়তে না পারবে, সে যেন স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা পড়ে নেয়। ( নাছায়ী, ইবনু মাযাহ)

এ বিষয়ে আনাছ থেকে আরো বর্ণিত, রাছূল বলেছেন:-

من نسى صلاة فليصلها إذا ذكرها لا كفارة لها إلا ذلك (رواه البخارى ومسلم)

অর্থঃ- যে কেউ কোন ওয়াক্বত সালাত আদা করতে ভুলে যাবে, সে যেন স্মরণ হওয়ার সাথে সাথেই সেই নামায পড়ে নেয়। এ ছাড়া এর আর কোন কাফ্‌ফারা নেই, এটাই তার কাফ্‌ফারা (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুছলিম)

Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: