দাফনের যত বিচিত্র প্রক্রিয়া

জন্মিলে মরিতে হয় । এটা বিধাতার বিধান । এ বিধান লঙ্ঘন করার সাধ্য কারো নেই । মানুষ মৃত্যুবরন করলে মৃতদেহ ধর্মভেদে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সৎকার করা হয় । সব ধর্মের সৎকার রীতি এক নয় । তবে প্রচলিত রীতির বাইরেকিছু গোষ্ঠী অভিনব অনেক প্রক্রিয়ায় সমাধি কার্য সম্পন্ন করে - যা একদিকে অমানবিক অপরদিকে অদ্ভুতও বটে । এটা সাধারণত হয়ে থাকে ধর্মীয় বিধি বিধান লোকাচার ও প্রথাগত কুসংস্কারের কারণে । চলুন জানা যাক পৃথিবীর নানা দেশে প্রচলিত বিচিত্র কায়দার কিছু দাফন প্রক্রিয়া সম্পর্কে

প্যারাগুয়ে
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ প্যারাগুয়েতে আদ্দেগালু উপজাতীয়দের কেউ মারা গেলে তার আত্মীয় স্বজনরা লাশটি কেটে রান্না করে খায় । হাড়গুলো জমা করে কিছুদিন ফেলে রাখে । তারপর একদিন সেগুলো পুড়িয়ে তার ছাইগুলো সযত্নে রেখে দেয় । এরকম করলে প্রেতাত্মা কোন ক্ষতি করতে পারে না বলে তাদের বিশ্বাস ।

একই দেশের আজকুইরা গোত্রের কারও মৃত্যু হলে অন্যরা এসে মৃতের আত্মীয়স্বজনের মাথায় কিলঘুষি চড় থাপ্পর মারতে থাকে । এতে মৃত ব্যক্তির প্রেতাত্মা দুর হয়ে যায় বলে তাদের ধারণা ।

পাপুয়া নিউগিনি
পাপুয়া নিউগিনির দুটি গোত্র ভিটাইয়া ও বেলালুর লোকজনের মধ্যে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে । এক গোত্র অন্য গোত্রের কাউকে খুন করতে পারলে হত্যাকারী গোত্রের লোকজন আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে । পুরুষরা পাখির পালক মাথায় দিয়ে এবঙ মেয়েরা মাথায় বনফুল গুজে নাচ গান শুরু করে । অন্যদিকে মৃতের গোত্রের লোকজন নানা ধরণের উপহার সামগ্রী লাশের মাথার চারপাশে জমিয়ে রাখে । এক ব্যক্তি একটি তীরের মাথায় এক গোছা ঘাস বেধে সেটা শুণ্যে নিক্ষেপ করে । পরে লাশটি পুড়িয়ে ফেলা হয় ।

মেক্সিকো
নিউ মেক্সিকোর পিলে বেলু গোত্রের কারও মৃত্যু হলে প্রথমে মদপানের ব্যবস্থা করা হয় । তারপর একজন জ্যোতিষি মৃতের মাথা থেকে এক গোছা চুল কেটে নিয়ে কবর খুড়তে যায় । মৃত ব্যক্তির ঘর থেকে কবর পর্যন্ত খাবার ভর্তি থালা পেতে দেয়া হ য় । সবাই একসঙ্গে খাওয়া শেষে জ্যোতিষি ক্রস চিহ্ণ একে দেয় । এতে মৃতের আত্মা ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে ঘরে ঢুকতে পারে না বলে তাদের বিশ্বাস । এরপর মৃত দেহটিকে সমাহিত করা হয় ।


তিব্বত
নেপাল ও ভোটান রাজ্যসংলগ্ন তিব্বত সীমান্ত এলাকায় বাস করে এক অদ্ভুত আদিবাসি । যার নাম সোরপা । তাদের সমাজে কারও মৃত্যু ঘটলে এরা এক ধরণের মন্ত্র পাঠ করেন । এতে মৃতদেহের ভেতর থেকে আত্মা মাথা দিয়ে বেরিয়ে যায় এমন বিশ্বাসই লালন করে সোরপা নামক এ অধিবাসীরা ।

এরপর লাশটিকে বসানোর মত করে বেধে রেখে তার সামনে বাতি জ্বালানো হয় । সে বাতির আলোয় লাশের চারদিকে বসে সবাই খাওয়া দাওয়া করে । পরে লাশটিকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয় ।

তিব্বতীয়দের মধ্যে আরও ভয়ানক সৎকার রীতি প্রচলিত রয়েছে । মৃতদেহটিকে পাহাড়েরর চুড়ায় তৈরী একটি সমতল স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় ।সেখানে পেশাদার একজন লোক দীর্ঘ ধারালো ছুরি দিয়ে মৃতদেহটিকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে । এরপর গোশতের টুকরোগুলো শকুনকে খাওয়ানো হয় । তিব্বতীয়দের বিশ্বাস, এতে মৃত ব্যক্তি স্বগীর্য় সমাধি লাভের মাধ্যমে অমর থাকে ।

বাংলাদেশ
বাংলাদেশের রাংগামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ি অঞ্চলে মারমা উপজাতির বসবাস । এ সম্প্রদায়ের কারো মৃত্যু হলে প্রচুর মদ খেয়ে নাচ গানসহ শবদেহ নিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয় ।

রঙিন কাগজে সাজানো বাশ ও কাঠের তৈরী পালকিতে শবদেহ রেখে ২০/২৫ জন লোক সেটা বহন করে নিয়ে যায় । পালকির সামনে থাকে পুরোহিত এবং বহনকারীদের মাথায় থাকে পাগড়ি । শববাহী পালকির আগে পিছে বাজনার তালে তালে বিচিত্র নাচ গান পরিবেশিত হয় । এভাবে দীর্ঘক্ষণ আনন্দ উল্লাস শেষে পালকিসহ মরদেহটি পুড়িয়ে তা মাটিতে পুতে ফেলা হয় ।

দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকায় লুথ নামে একটি গোত্র আছে । এ গোত্রের কেউ মারা গেলে তারা নাড়িভুড়ি বের করে সবাই স্যুপ রান্না করে খায় । এরপর মৃতদেহটি পাহাড়ের উপর কিংবা সুবিধাজনক জায়গায় রেখে তা না শুকানো পর্যন্ত পালা করে পাহাড়া দেয়া হয় । শুকিয়ে অনেকটা শুটকির মতো হয়ে গেলে কেটে কেটে রান্না করে খাওয়া হয় ।
 

আল্লাহ পাকের কাছে লাখ লাখ কোটি কোটি শুকরিয়া.........যে, আল্লাহ আমাকে একজন মুসলমান করে সৃষ্টি করেছেন । আমাদের ধর্মের দাফন প্রক্রিয়া কত সুন্দর ।

আল্লাহ পাক যেন ঈমানের সাথে আমাকে মৃত্যু দেন । আমীন

Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: