নূর হোসেন

নূর হোসেন

গণতন্ত্রের মুক্তিকামী তরুন নূর হোসেন ১৯৬১ সালে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহন করেন। পিতা মুজিবুর রহমান ছিলেন পেশায় আটো-রিকশা চালক। অথর্নৈতিক অসচ্ছলতার কারনে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনার পর নূর হোসেন মোটর চালক হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরে রাজধানীতে বেবিট্যাক্সি চালিয়ে সংসার চালাতেন।

নিম্নবিত্ত পরিবারের সস্তান নূর হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন যুবলীগের মহানগর কমিটির সদস্য।

১৯৮৭সালের ১০ই নভেম্বর। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে চলছে সর্বাত্মক হরতাল। ‘চল চল-ঢাকায় চল’ শ্লোগানে সারা দেশ থেকে মানুষ জমায়িত হয়েছে গুলিস্থান এলাকায়। একের পর এক মিছিল আসছে, যাচ্ছে। রাস্তা জুড়ে সামরিক সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী। এ মিছিলে খালি গায়ে বুকেপিঠে সাদা কালিতে লেখা ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ শ্লোগানে যোগ দেন নূর হোসেন। বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে হাজারো লোকের রাজপথ কাঁপানো বিরাট মিছিল গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জিপিওর জিরো পয়েন্টে আসার পরই পুলিশ সচিবালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ থেকে সাহসী যুবক নূর হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। সঙ্গে সঙ্গে নূর হোসেন পিচ ঢালা পথে লুটিয়ে পড়েন। তার দেহ থেকে রক্ত ঝরে রঞ্জিত হয় রাজপথ। আহত নূর হোসেনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুলিশ জোর করে কার অর্ধমৃত দেহ কেড়ে নেয়। পরে গোপনে তার লাশ কবরও দেয় সামরিক সরকার।

নূর হোসেনের মৃত্যুতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ বি‍ক্ষেভে ফেটে পড়েন। ফলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন আরোও ত্বরান্বিত হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ পদত্যাগ করেন। নূর হোসেনের স্মৃতির শ্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার নামে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া তিনি যে স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, তার নামানুসারে সেই জিরো পয়েন্টের নামকরন করা হয়েছে নূর হোসেন স্কয়ার।

Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: