পা দিয়ে লিখে এস এস সি পরীক্ষা !

আয়েশা আক্তার একজন প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত নেই। হাত না থাকলেও মনের জোর তার অনেক বেশি। একজন প্রতিবন্ধী মেয়ে হয়েও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায় সে। আর তাই সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে খাতায় উত্তর লিখছে পা দিয়েই। গত সোমবার সাঘাটা পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি পরীক্ষা শেষে কথা হয় আয়েশা আক্তারের সঙ্গে। সে সাঘাটা উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামের দিনমজুর আবদুল লতিফের মেয়ে। চার বোনের মধ্যে আয়েশা তৃতীয়। জন্ম থেকেই তার দু’হাত নেই। একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি তার বাবা আবদুল লতিফ দিনমজুরের কাজ করে অতিকষ্টে সংসার চালান। অভাব-অনটনের কারণে অন্যান্য বোনেরা পড়াশোনা করতে পারেনি। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল আয়েশার। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও মনের জোর তার বাধ মানেনি। ভর্তি হয় স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পা দিয়েই সে খাতায় লেখে। ৫ম শ্রেণী পাস করার পর তার বাবা-মা তাকে বিয়ে দিতে চান। কিন্তু গ্রামের এক শিক্ষিকা সুলতানা শামিম আরা তাকে বাল্যবিয়ের কবল থেকে রক্ষা করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন কচুয়াহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। তখন থেকে পুরোদমে পড়াশোনা চালিয়ে যায় আয়েশা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তায় এবার সে এসএসসি (মানবিক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। কচুয়াহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, আয়েশা আক্তারের দু’হাত না থাকলেও পা দিয়েই সে সুন্দরভাবে লিখতে পারে। বিদ্যালয়ের প্রতিটি পরীক্ষাতেই সে পা দিয়ে লেখেই উত্তীর্ণ হয়। সংসারের অন্যান্য কাজও সে পা দিয়েই করতে পারে। আয়েশা আক্তার জানায়, প্রতিবন্ধী হলেও সে সমাজের বোঝা হয়ে বাঁচতে চায় না। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সে সমাজের অন্যান্য মানুষের মতো বাঁচতে চায়। এজন্য সে চায় সরকারি-বেসরকারি সহায়তা।

 

Prayer Times For 6 Million Cities Worldwide
Country: