ভুমিকাঃ
* বাইয়াত বা শপথ ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা।
* ইসলামী আন্দোলনের সফলতার জন্য বাইয়াতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
* রাসুল (সা.) এর কাছ থেকে সাহাবীগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বাইয়াত নিয়েছেন।
* আকাবার শপথ
* হুদায়বিয়ার শপথ
* মক্কা বিজয়
বিঃ দ্রঃ নবুয়্যতের ১১ তম বছরে — ৬ জন,নবুয়্যতের ১২ তম বছরে — ৬ জন,নবুয়্যতের ১৩ তম বছরে — ৭৫ জন (৭৩ জন পুরুষ, ২ মহিলা)।
যুদ্ধের প্রাক্কালে সাহাবীরা রাসুল (সা.) এর কাছে বাইয়াত নিতেন। রাসুল (সা.) এর ওফাতের পরও মুসলমানরা তার স্থলাভিষিক্তের নিকট বাইয়াত নিয়েছেন।
আজকের যুগেও কোন বিপ্লব বা আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য যে কোন পর্যায়ে শপথেরপ্রয়োজন আছে।
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাতেও শপথের বিধান আছে। যেমনঃ প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী,স্পীকার, মন্ত্রী, বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনার, সংসদ সদস্য ইত্যাদি।
মুসলিম সমাজেও পীরদের/আওলিয়াদের হাতে বাইয়াতের পদ্ধতি আছে।মুসলমানদের সামষ্ঠিক জীবন পরিচালনার ভার যার উপর ন্যাস্ত করা হয় তার হাতে বাইয়াত নেয়া ইসলামের ইতিহাসে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।
মোট কথা বাইয়াত মুসলিম উম্মাহর একটি সম্মিলিত কাজ যা কোন যুগেই বাদ থাকেনি।
বাইয়াতের বা শপথের অর্থঃ
বাইয়াত শব্দের উৎপত্তি আরবি থেকে যার অর্থ কেনা-বেচা, লেন-দেন, ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি। বাইয়াতের ইংরেজী প্রতিশব্দ সমূহ হলোঃ Agreement, Arrangement, Business, Deal, Contact, Commercial Transaction, Bargain, Sale, Purchase etc. পারিভাষিক অর্থে– চুক্তি, অঙ্গীকার, ব্যবসা, সম্পর্ক, যোগাযোগ, বাণিজ্যিক লেনদেন, আলোচনা-পর্যালোচনা করা, বিক্রয়, ক্রয় ইত্যাদি। মূলতঃ বিক্রয় করার কাজটিই বাইয়াত নামে অভিহিত হয়। বাইয়াত বিক্রয় করা। পারিভাষিক অর্থ কারো হাত ধারণ করে কোন বিষয়ে অঙ্গীকার করা। এই অঙ্গীকার সাধারণত আনুগত্য, বিশ্বাস বা কাজের অঙ্গীঁকার হয়ে থাকে। রাসুল (সা.) এই পদ্ধতিতে সাহাবীদের নিকট হতে ইসলামের, জিহাদের অথবা উত্তম কাজের অঙ্গীকার গ্রহণ করতেন।
সাথীঃ
যারা বা যিনি নিজের সুখে এবং দুঃখে সর্বাবস্থায় আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে একসাথে থাকেন এবং যেকোন পরিস্থিতিতেই তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাকেই সাথী বলা হয়ে থাকে। হযরত আবু বকর, হযরত আলী, ইত্যাদি।
কুরআনে বাইয়াত শব্দের ব্যবহারঃ
১. বেচা-কেনা/ লেনদেন অর্থে –
“হে ঈমানদারগণ! জুমআর দিনে যখন তোমাদের নামাজের জন্য ডাকা হবে তখন তোমরা (নামাজের মাধ্যমে) আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাও। আর কেনা-বেচা ছেড়ে দাও, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা তা উপলদ্ধি করতে পার।” (সূরা জুমআ- ৯)।
"আর তারা এমন লোক, ব্যবসা-বাণিজ্য তাদের কখনোও আল্লাহ থেকে গাফেল করে দেয়না। বেচা-কেনা তাদেরকে আল্লাহর স্মরণ, নামাজ প্রতিষ্ঠা ও যাকাত আদায় করাথেকে বিরত থাকতে দেয়না। তারা সেদিনের ভয় করে যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টিশক্তি ভীত-বিহল হয়ে পড়বে।” (সূরা আন নূর- ৩৭)।
২. চুক্তি অর্থে- জান্নাতের বিনিময়ে জান-মাল উৎসর্গের চুক্তি –
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জান এবং মাল খরিদ করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, কখনো তারা কাফেরদের হত্যা করে আবার কখনো তাদের হাতে শাহাদাত বরণ করে। এই ওয়াদা তাওরাত ও ইঞ্জিলে করা হয়েছে আর এখন কুরআনেও করা হচ্ছে। এই ওয়াদা পালন করা আল্লাহর নিজস্ব দায়িত্ব আর ওয়াদা পালনে আল্লাহর চাইতে কে বেশী সক্ষম? অতএব হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাথে কেনা-বেচার কাজটি সম্পন্ন করো আর আনন্দিত হও। আর এটিই হচ্ছে মহা সাফল্য” (সূরা আত তাওবা- ১১১)।
৩. সার্বভৌম শক্তির আনুগত্যের শপথ –
“নিঃসন্দেহে যারা আজ তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছে তারা প্রকারান্তরে আল্লাহর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছে। তাদের হাতের উপর আল্লাহ তায়ালার কুদরতি ছিল। তাদের কেউ যদি এই বাইয়াত ভঙ্গ করে তাহলে এর পরিনাম তার নিজের উপরই এসে পড়বে। আর আল্লাহ তার উপর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা যে সে পূর্ণ করে, তিনি অচিরেই তাকে মহা পুরস্কার দান করবেন।”(সূরা আল ফাতাহ-১০)।
৪. বাইয়াত অর্থ আল্লাহর মর্জিমত চলা –
” হে নবী! যখন কোন ঈমানদার নারী তোমার কাছে আসবে এবং এই বলে তোমার কাছে আনুগত্যের শপথ করবে- তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করবেনা, চুরি করবেনা, ব্যাভিচার করবেনা, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবেনা, নিজ হাত ও নিজ পায়ের মাঝখান সংক্রান্ত বিষয় (তথা অন্যের ঔরসজাত সন্তানকে নিজ স্বামীর বলে দাবী করার ) মারাত্মক অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আসবেনা এবং কোন সৎকাজে তোমার না ফরমানি করবেনা, তাহলে তুমি তাদের আনুগত্য গ্রহণ কর এবং তাদের পূর্ববর্তী কৃতকলাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।”(সূরা আল মোমতাহেনা- ১২)।
৫. মৃত্যুর শপথ –
১. হুদায়বিয়ায় হযরত ওসমান (রা.) এর মৃত্যুর সংবাদে মুসলমানদের অবস্থা ছিল এই, মরে যাব তবু ওসমান হত্যার বদলা নিব।
২. মুতার যুদ্ধে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন- যায়েদ ইবনে হারেসা, জাফর ইবনে আবি তালিব, আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা। জাফর ইবনে আবি তালিব।
৩. রোমান বাহিনীর অভ্যন্তর তছনছ করে দেন।
৪. ডান এবং বাম হতে দ্বি-খন্ডিত
৫. বাহু, বুক এবং মুখ দিয়ে পতাকা উত্তোলন
৬. সারা দেহে নবইটি ক্ষত চিহ্ন।
৬. জিহাদের ময়দানে অটল ও অবিচল থাকা
“হযরত উমর (রা.) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন বিষয়ের উপর আপনারা সেদিন বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন? তিনি বললেন সবরের উপর বাইয়াত গ্রহণ করেছিলাম। আমরা শপথ নিয়েছিলাম শত্রু পক্ষ যতই শক্তিশালী হউক না কেন আমরা জিহাদের ত্যাগ করে চলে যাবনা।” (বুখারী)
আবু জানদান বিন সোহায়েল হুদায়বিয়ার সন্ধির পর যাকে ফেরত পাঠানো হয়।হযরত বেলাল, হযরত খাবাব, হযরত খুবাইব।
বাইয়াতের শরয়ী মর্যাদা/গুরুত্বঃ
১. আল্লাহর সন্তুষ্টির পয়গাম
“ঈমানদারগণ যখন গাছের নীচে বসে তোমার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিল, তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের মনের (উদ্বেগজনিত) অবস্থা ভাল করেই জানতেন। তাই তিনি তাদের উপর মানসিক প্রশান্তি নাজিল করলেন এবং আসন্ন বিজয় দিয়ে তাদেরকে পুরুস্কৃত করলেন।” (সূরা আল ফাতাহ- ১৮)
২. ইসলামী সংগঠনের নিকট বাইয়াতের মাধ্যমেই আল্লাহর নিকট বাইয়াতের দাবী পূরণ করে -
“রাসুল (সা.) বলেছেন, যে আমার আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল, আর যে আমার আনুগত্যহীণতা বা অমান্য করল সে যেন আল্লাহকেই অমান্য করল। রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য করল সে আমারই আনুগত্য করল আর যে ব্যক্তি আমীরের অবাধ্য হলো সে যেন আমারই অবাধ্য হলো।”
৩. দ্বীনের জন্য জান বাজী রাখার শপথ ঈমানের দাবী
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জান এবং মাল খরিদ করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে।” (সূরা আত তাওবা- ১১১)
৪. আল্লাহর ভালবাসা অর্জনের একমাত্র উপায়
“হে রাসূল, আপনি বলুন তারা যদি আল্লাহকে ভালবাসে এবং তার আনুগত্য করে তাহলে আমিও তাদেরকে ভালবাসব।” (সূরা)
৫. বাইয়াত ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণা
১. গতিশীলতা সৃষ্টি করে ২. জানবাজ কর্মী তৈরী করে
৩. দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য ৪. নফসের ওয়াসওয়াসা থেকে বাচাঁর জন্য
বাইয়াত না করার পরিনতিঃ
১. বাইয়াত বিহীন মৃত্যু জাহিলিয়াতের মৃত্যু
২. জিহাদের বাইয়াত থেকে বিরত থাকা মুনাফেকীর লক্ষণ
৩. আনুগত্যের শপথবিহীন মৃতু্য জাহেলী মৃতু্য।
“যে ব্যক্তি আনুগত্য থেকে দূরে থাকল এবং জামায়াত থেকে বের হয়ে গেল সে জাহিলিয়াতের মৃতু্য বরণ করল”।
বাইয়াতের অন্তরায়ঃ
১. নফস -”নারী জাতি, সন্তান-সন্তুতি, কাড়ি-কাড়ি সোনা-রূপা, পছন্দসই ঘোড়া, গৃহপালিত জন্তু ও যমিনের ফসল (সব সময়ই) মানব সন্তানের জন্য লোভনীয় করে রাখা হয়েছে। এসব হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগের সামগ্রী মাত্র। স্থায়ী জীবনের আশ্রয় তো একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে।” (সূরা আল ইমরান-১৪)
২. আত্মীয় – স্বজন – “হে নবী বলো, যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের ভাই, তোমাদের পরিবার পরিজন ও তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, যা অচল হয়ে যাবে বলে তোমরা ভয় করো, তোমাদের বাড়ীঘর সমূহ, যা তোমরা একান্তভাবে কামনা করো, এগুলো যদি আল্লাহ তায়ালা, তার রাসূল এবং তার পথে জিহাদ করার চাইতে বেশী ভালোবাসো, তাহলে তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাবের ঘোষনা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। জেনে রাখ আল্লাহ কখনো ফাসেক সমপ্রদায়কে হেদায়াত করেন না।” (সূরা আত তাওবা- ২৪)
৩. দুনিয়ার মোহ – “ওহে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! এ কি হলো তোমাদের? যখন তোমাদের আল্লাহর পথে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা যমীন আকঁড়ে ধরো, তোমরা কি আখেরাতের সম্মৃদ্ধির তুলনায় দুনিয়ার জীবনকেই বেশী ভালবাসো? অথচ পরকালের তুলনায় দুনিয়ার এই জীবন খুবই নগন্য।”(সূরা আত তাওবা- ৩৮)
কয়েকজন সাহাবী তাবুক যুদ্ধে না যেয়ে এই কাজ করেছিলেন – কা’ব বিন মালিক, মুরারা বিন রাবিয়া, হেলাল বিন উমাইয়া।
বাইয়াত কার কাছে নিতে হবেঃ
১. আল্লাহর কাছে ২. রাসুলের কাছে ৩. উলুল আমরের কাছে
“নিঃসন্দেহে যারা আজ তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছে তারা প্রকারন্তরে আল্লাহর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করেছে। তাদের হাতের উপর আল্লাহ তায়ালার কুদরতি ছিল।” (ফাতাহ – ১০)
বাইয়াতের কাঠামো বা পদ্ধতিঃ
১. আসল বাইয়াত আল্লাহর কাছে
২. আল্লাহকে দেখা যায় না তার পরেও আল্লাহর কাছেই বাইয়াত নিতে হয়
৩. আল্লাহ তায়ালা এই বাইয়াত নেয়ার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন
৪. নবী-রাসুল হেদায়েত পৌঁিছয়েছেন – যারা হেদায়েত গ্রহণ করেছেন তারা নবী-রাসুলদের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বাইয়াত নিয়েছেন
৫. রাসুল চলে যাওয়ার পরে চার খলিফাগণ বাইয়াত দিয়েছেন
৬. রিসালাত, খিলাফত শেষ কিন্তু বাইয়াতের ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই, দ্বিমত শুধু মাত্র পদ্ধতিগত
বাইয়াতের পদ্ধতি ২টিঃ
১. ব্যক্তির কাছে ২. সংগঠনের কাছে।
ব্যক্তির হাতে বাইয়াতঃ
* যিনি অধিক জানেন ও মানেন- এমন ব্যক্তির কাছে বাইয়াত জায়েজ
* বাইয়াত – সবকিছু সোপর্দ করে দেয়া * ব্যক্তির হাতে বাইয়াত ঝুকিপূর্ণ।
সংগঠনের কাছে বাইয়াতঃ
* এমন দল যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে চায় * কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক আদর্শ
* পরামর্শ ভিত্তিক দল * ভুল হলে সংশোধনের পদ্ধতি আছে
* এটি তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ।
আমাদের বাইয়াতঃ
# সংগঠনের কাছে – ব্যক্তির পরিবর্তনে আনুগত্যের পরিবর্তন হবে না
# চুড়ান্ত বাইয়াত – সদস্য শপথ # সাথী সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত
স্তর বিন্যাস রাসুলের আমলে ছিলনা
- এটি আধুনিক পদ্ধতি।
১. বাইয়াত গ্রহণকারী সংগঠনের বৈশিষ্ট্যঃ
১. পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের দাওয়াত –
“আজ আমি আমার দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের উপর নেয়ামত দান করলাম এবং জীবন ব্যবস্থা হিসাবে একমাত্র ইসলামকেই মনোনিত করলাম।”
২. পরিপূর্ণ মুসলমান হিসাবে জীবন যাপনের অনুশীলন
“তোমরা পরিপূর্ণ ভাবে ইসলামে প্রবেশ করো"।
৩. ইকামতে দ্বীনের দায়িত্ব পালন
“তোমরা দ্বীন কায়েম করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা।"
৪. সুসংগঠিত উপায়ে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কর্মসূচি বাস্তবায়ন –
“হযরত জারীর (রা.) হতে বর্ণিত তিনি রাসুল (সা.) বলেছেন , আমি তোমাদেরকে পাঁচটি কাজের নির্দেশ দিচ্ছি যা আমার রব করতে বলেছেনঃ সংঘবদ্ধ থাকতে, শুনতে, আনুগত্য করতে, হিজরত করতে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করতে।”
২. বাইয়াত ও ইসলামী আন্দোলনঃ
Cader System
জাগতিক আন্দোলন লেনিন থেকে
# ইসলামী আন্দোলনে ইমাম ইবনে তাইমিয়া থেকে
# সাংগঠনিক কাঠামো বিজ্ঞান ভিত্তিক করা থেকে উদাহরণঃ মাওলানা মওদূদী ও হাসানুল বান্না
# রাসুলের যুগে আহলে সুফ্ফা ও আশারায়ে মোবাশ্শারা
# আমাদের সংগঠনে শপথের জনশক্তিরাই ময়দানের কার্যকরী শক্তি
# সংবিধান স্বীকৃত জনশক্তি # সংগঠনের আমানতদার # সংগঠনের পরিচয় তাদের উপর নির্ভর করে।
Cader পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তাঃ
১. যোগ্যতার মূল্যায়নের জন্য ২. দায়িত্ব বিন্যাসের জন্য
৩. সংগঠনের শৃঙ্খলা বিধানের জন্য ৪. প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সুষ্ঠূ ভাবে সম্পাদন করার জন্য।
বাইয়াতের উদ্দেশ্যঃ
* ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত মানব সমাজের কাছে পৌঁছে দেয়া
* আমর বিল মা’রুফ ও নেহী আনিল মুনকারের বাস্তবায়নের জন্য
* কু প্রবৃত্তি দমন ও সু প্রবৃত্তি লালনের জন্য * জান এবং মালের কুরবানীর জন্য
* উন্নত নৈতিকতার কাংখিত মানে পৌঁছানোর জন্য।
শপথের আলোকে আমাদের জীবনঃ
১. আন্তরিক সিদ্ধান্ত
“তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা পাওয়ার কাজে প্রতিযোগিতা করো, আর সেই জান্নাতের জন্য প্রতিযোগিতা করো যার বিশালতা ও প্রশস্ততা আকাশ ও পৃথিবীর সমান, এই জান্নাত প্রস্তুত করা হয়েছে সে সব ভাগ্যবান মানুষদের জন্য যারা আল্লাহকে ভয় করে।” (সূরা আলে ইমরান – ১৩৩)
২. পরিকল্পনা গ্রহন (বার্ষিক, ষান্মাসিক, ত্রয়োমাসিক, মাসিক, সাপ্তাহিক, দৈনিক)
৩. ইলমী প্রস্তুতি
*হেদায়াতের নিয়তে পরিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে কুরআন অধ্যয়ন
* হাদীস অধ্যয়ন – রাসুল (সা.) এর মজলিসের একজন মনে করে হাদীস অধ্যয়ন
* ইসলামী আন্দোলন, সংগঠন, মতবাদ, অর্থব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, মাসআলা-মাসায়েল,
ইতিহাস ও সিলেবাস ভিত্তিক অধ্যয়ন
* ইসলামের মৌলিক জ্ঞান * সাধারণ জ্ঞান ও পারিপাস্বিক জ্ঞান।
পরিচ্ছন্ন আমল
* খুশু ও খুজুর সাথে নামাজ আদায় * নামাজ কাজা না করা * জামায়াতের সাথে নামাজ আদায়
* সাহাবাদের নামাজ * মোয়ামেলাত * লেনদেনে পরিচ্ছন্নতা * ওয়াদা পালন
* আমানতদারীতা * পর্দা * দ্বিধাহীন আনুগত্য * যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মানসিকতা
*. সংগঠন বুঝা * রিপোর্টিং পদ্ধতি * ইতিহাস-ঐতিহ্য * সংবিধান – কর্মপদ্ধতি * শাখার কাজ
* সকল খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে ভালো কাজে ব্যস্ত রাখা
* তাওবা, এস্তেগফার এবং আত্মসমালোচনা করা * আত্মগঠন ও মানউন্নয়নের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানো
* রিপোর্ট বাদ না দেয়া * সিলেবাসের গুরুত্বপূর্ণ বই নোট * দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ
ভারসাম্যপূর্ণ জীবন গঠনের চেষ্টা চালানো
* লেখাপড়া ও সাংগঠনিক কাজ * মনীষীদের জীবনী পড়ে একাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা
নফল ইবাদত সাধারন অভ্যাসে পরিনত হওয়া
জিহাদের ময়দানে নিজেকে উৎসর্গ করা
সার্বক্ষণিক জিকির, দোয়া এবং আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।